সসম্প্রতি পার্বত্য চট্টগ্রাম এখন একটি আতঙ্কে পরিণত হয়েছে দেশব্যাপী। ফ্যাসিবাদী সরকার পতনে দেশের বিশৃঙ্খলার পাশাপাশি পার্বত্য চট্টগ্রামে আরো ব্যাপক সহিংসতা সৃষ্টি করেছেন একটি সুবিধাভোগী মহল। পার্বত্য বাঙ্গালিদের মিথ্যা দোষারোপে বিচারবিহীন হত্যাকান্ড ঘটিয়ে ছিলেন। এছাড়াও রাষ্টবিরোধী শব্দ চয়ন ”আদিবাসী” দিয়ে দেশকে বিচ্ছেদে অস্থিতিশীল করাসহ সাধারণ পাহাড়িদের অত্যচার- নির্যাতনে অতিষ্ঠ করে তুলেছেন। পার্বত্য চট্টগ্রামে নন-স্টপ চাঁদাবাজিতে পার্বত্য অঞ্চলে সমতল ব্যবসায়ীরা অনিরাপদের জন্য আসছেন না। এতে পার্বত্য চট্টগ্রামের অর্থনীতি আরো ভঙ্গুর হচ্ছে দিন দিন। আর এই সকল সমস্যার জন্য একমাত্র দায়ভার নিতে হবে পাহাড়ি সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো। যখন থেকে পার্বত্য অঞ্চলে প্রায় তিন-শতাধিক সেনাক্যাম্প, সাব-ক্যাম্প তুলে নিয়েছে পার্বত্য চুক্তিমত তখন থেকে এই অস্ত্রের সহিংসতা ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়ে তীব্র আকার ধারণ করেছে।
এছাড়াও নিজ দেশের নাগরিকদের পার্বত্য চট্টগ্রাম ভ্রমণ না করার পরামর্শ দিয়েছে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস। একই সঙ্গে বাংলাদেশ ভ্রমণের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতেও পরামর্শ দিয়েছে দূতাবাস।
গত শুক্রবার দূতাবাসের ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত একটি সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। এতে বাংলাদেশকে লেভেল-৩ এবং পার্বত্য চট্টগ্রামকে লেভেল–৪ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, অস্থিতিশীলতা, অপরাধ ও সন্ত্রাসমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে বাংলাদেশ ভ্রমণের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করুন। কয়েকটি এলাকায় নিরাপত্তা ঝুঁকি বৃদ্ধি পেয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম ভ্রমণ সতর্কতায় বলা হয়েছে, জাতিগত সহিংসতা, অপরাধ, সন্ত্রাস, অপহরণ এবং অন্যান্য নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি এবং বান্দরবান পার্বত্য জেলাগুলো ভ্রমণে বিরত থাকুন।
এতে আরও বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পাশাপাশি ২০২৪ সালের গ্রীষ্ম থেকে অস্থিতিশীলতা এবং সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিচ্ছিন্ন বিক্ষোভগুলো যে কোনো সময় সহিংসতা রূপ নিতে পারে। মার্কিন নাগরিকদের এসব জমায়েত, শান্তিপূর্ণ হলেও এড়িয়ে চলতে বলা হচ্ছে। কারণ যে কোনো সময় পরিস্থিতি সহিংস হয়ে উঠতে পারে।
এছাড়াও বাংলাদেশে সন্ত্রাসী হামলার ঝুঁকি রয়েছে বলেও নাগরিকদের সতর্ক করেছে মার্কিন দূতাবাস। সতর্কবার্তায় মার্কিন সরকারি কর্মচারীদের খুব প্রয়োজন ছাড়া কূটনৈতিক এলাকার বাহিরে না যেতে বলা হয়েছে। ঢাকার বাহিরে ভ্রমণ করতে তাদের বিশেষ অনুমোদন নিতে বলা হয়েছে। অবশ্য সিলেট ও কক্সবাজার ভ্রমণের ক্ষেত্রে কোনো অনুমোদন লাগবে না বলে জানিয়েছে দূতাবাস। এছাড়া বিশেষ প্রয়োজন নাগরিকদের দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতে বলা হয়েছে সতর্কবার্তায়।
এই পরিস্থিতি এভাবে চলমান থাকলে পার্বত্য চট্টগ্রামে লাগামহীন অত্যচার-নির্যাতনের শিকার হবে সাধারণ পাহাড়ি-বাঙ্গালি। সম্প্রতি পাহাড়ি সন্ত্রাসীর অভ্যন্তরীণ কোন্দলে লোমহর্ষক পাহাড়ির শিক্ষার্থীর অপহরণ এর চেয়েও ভয়ানক ঘটনা ঘটবে। তাই এমন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের সম্ভাব্য একমাত্র উপায় প্রত্যাহারকৃত ২৪৪ টি সেনা ক্যাম্প পুন:স্থাপন।
উৎস: ইন্ডিপেনডেন্ট নিউজ।
লেখক:
ওমর ফারুক
সহ-সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক কেন্দ্রীয় কমিটি
সাবেক- সিনিয়র সদস্য, চবি শাখা,
পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ(পিসিসিপি)।
[email protected]