সম্পাদকীয়:
সহ-সম্পাদক,দৈনিক যুগান্তর বাংলাদেশ
গত ৫ ই আগস্টের পর থেকে বর্তমান অন্তবর্তী কালীন সরকারের ৮ মাস শেষে নবম মাসের কার্যক্রম চলমান। এই কার্যক্রম গুলোর মধ্যে রয়েছে সংস্কারসহ বিভিন্ন সরকারি উন্নয়ন ও দাপ্তরিক কর্মকাণ্ড। ছাত্র জনতার জুলাই অভ্যুত্থানের পর বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে নির্বাচন নির্বাচন স্লোগান দেখা যাচ্ছে। এরই প্রেক্ষিতে গত মার্চ মাসে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস আগামী ডিসেম্বর থেকে জুন মাসের মধ্যে নির্বাচন হবে বলে ঘোষণা করেছিলেন। চলতি এপ্রিল মাসের মধ্যবর্তী কালীন সময় বিএনপি’র একটি প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূসের সাথে সাক্ষাৎ করেন। সে সময়ও তারা নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ জানতে চাইলে ঐ সময় প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস আগামী ডিসেম্বর থেকে জুন মাসের মধ্যেই নির্বাচন হবে বলেন। এতে বিএনপি তেমন একটা সন্তুষ্ট হতে পারেনি বলে মিডিয়াকে জানান। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সফরে আসা প্রতিনিধিদের সাথে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সৌজন্যমূলক বৈঠকে জামায়াতের আমির ডা: শফিকুর রহমান বলেছিলেন আগামী রমজান মাসের আগেই নির্বাচন চাই। তার মানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ডিসেম্বর থেকে মার্চ মাসের আগে নির্বাচন চাই। এরই মধ্যে নির্বাচনের সুরে বিএনপি এবং জামায়াতের কিছুটা দূরত্ব কমেছে। অন্যদিকে নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপি’র দাবি তারা সংস্কার না হওয়ার আগে নির্বাচন দিলে তারা নির্বাচনে আসবে না তথা অংশগ্রহণ করবে না।
আমরা যে যার যার মত নির্বাচন নিয়ে কথা বলতেছি। কিন্তু কি একবারও ভেবে দেখেছি দেশের জনগণ কখন নির্বাচন চাই? বর্তমান দেশের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের দিকে লক্ষ্য করলে বোঝা যায় দেশের অনেক সাধারণ জনগণ এখন নির্বাচন চাই না? আবার অনেকেই চাই? এ বিষয়ে সাধারণ জনগণের মতামত নেওয়া অতীব জরুরী। যা বিশ্বের অন্যান্য রাষ্ট্রের মধ্যে হয়ে থাকে। এখন জনগণের মতামত নিয়েই আগামী নির্বাচনটা হওয়ায় ইতিবাচক মনে করছেন বিশ্লেষকরা। কারণ এই দেশ কারো একক বা একার নয়। এদেশের মালিক দেশের সকল জনগণ। তাই জনগণের উপর রাজনৈতিক এই সংস্কৃতি থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। এখন থেকে জনগণ কে প্রধান্য দিতে হবে।
কারণ বিগত সরকারের আমলে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি যে পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে। তা অত্যন্ত দুঃখজনক ছিল। বিগত সরকার সহ সরকারের সাথে জড়িত শিক্ষিত ডাকাতরা যেভাবে দেশের টাকা বাহিরে পাচার করেছে দুর্নীতি করেছে তা দেশের মানুষ কখনোই ভুলবে না। এমন এক পরিস্থিতিতে দেশের হাল ধরেছেন অন্তবর্তী কালীন সরকার। তারা আস্তে আস্তে দেশের অর্থনৈতিক মূল্যবোধ বৃদ্ধি করে দেশের অর্থনৈতিক চাকা কে সচল রাখতে কাজ করে যাচ্ছে। আস্তে আস্তে মূল্যস্ফীতি ও কমতে আরম্ভ হয়েছে। দেশের পুলিশ প্রশাসন ও স্বাভাবিক হচ্ছে। বিগত আট মাসের মধ্যে তেমন একটা গুম এর খবর শোনা যায়নি। সরকার পতনের পর থেকেই বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন আন্দোলনে দাবি দাওয়া আদায়ের মিছিল মিটিং মানববন্ধনে কোন ধরনের গুলি বর্ষন হয়নি। এ যেন নতুন এক বাংলাদেশের আবির্ভাব। এমন এক পর্যায়ে নির্বাচনের দাবি আনছে রাজনৈতিক দলগুলো। দাবি আনাটাই স্বাভাবিক। দেশের বর্তমান অন্তবর্তী সরকারের বৈধতা নিয়েও কারো মনে কোন প্রশ্ন নেই। তবে অনির্বাচিত সরকার বেশিদিন ক্ষমতায় না থাকাই ভালো। দেশে বর্তমানে বিএনপি জামায়াত দুটি বড় দল রয়েছে। তারাও একটা জরিপ করুক সরকারও একটা জরিপ করুক । জরিপের মাধ্যমে নির্ধারিত হোক কবে নির্বাচন হবে। সেটা এই ডিসেম্বর থেকে জুন বা পরবর্তী ডিসেম্বর থেকে জুনে। তবে নির্বাচন হবেই এবং নির্বাচিত সরকার আসবেই।
এম ইমরান বিন ইসলাম, সহ-সম্পাদক,দৈনিক যুগান্তর বাংলাদেশ।
সম্পাদকীয় : ২৮/০৪/২৫ইং।