পিরোজপুর প্রতিনিধি
১৭/০৪/২৫
পিরোজপুরে এলজিইডি’র দুর্নীতিকান্ডে জেলা হিসাব রক্ষণ অফিসের চার কর্মকর্তা ও এলজিইডি অফিসের এক কর্মচারীকে গ্রেফতার করেছে দুদক। বুধবার রাতে তাদেরকে গ্রেফতার করে পিরোজপুর সদর থানা হেফাজতে রাখা হয়। পরে বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতে হাজির করলে আদালত শুনানী শেষে তাদের জেল হাজতে প্রেরণ করে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- পিরোজপুর জেলা হিসাব রক্ষণ অফিসের জেলা এ্যাকাউন্টস এন্ড ফিন্যান্স অফিসার মোঃ মোহাসীন, এসএএস সুপার মোঃ মাসুম হাওলাদার ও নজরুল ইসলাম, সাবেক ডিস্ট্রিক্ট এ্যাকাউন্টস এন্ড ফিন্যান্স অফিসার মোঃ আলমগীর হাসান এবং পিরোজপুর এলজিইডি অফিসের হিসাবরক্ষক একেএম মোজাম্মেল হক খান।
মঙ্গলবার পিরোজপুরে দুদক এর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোঃ আমিনুল ইসলাম ২৭ জনকে অভিযুক্ত করে ৮টি মামলা দায়ের করে। এদের মধ্য থেকে বুধবার ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকালে জেলা দুদক কার্যালয়ে এক প্রেসব্রিফিংএ উপ-পরিচালক মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, তারা যাচাই বাছাই করে দেখতে পান ১৭ টি প্রকল্পে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ পান। এর মধ্যে ৮টি প্রকল্পের ৮ প্রকল্পের ৪শত স্কীমের পিরোজপুর এলজিএডির সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুস ছত্তার, উপ সহকারী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম এবং হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক খান মনের মাধূরী মিশিয়ে বিভিন্ন প্রোজেক্ট তৈরী করে ১ শত ৭৩ কোটি টাকা গ্রেফতারকৃত জেলা হিসাব রক্ষন কর্মকর্তাদের যোগ সাজশে আত্মসাত করে । এর সাথে পিরোজপুর-২ আসনের সাবেক সাংসদ মহিউদ্দিন মহারাজ, তার ভাই ভান্ডারিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মিরাজুল ইসলাম সহ তাদের অন্য ভাই ও স্ত্রীরাও সরাসরি জড়িত । তিনি বলেন, বর্তমানে ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তদন্ত চলা কালে আরও কারো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাদের কেও আসামী করা হবে। ৮টি মামলায়ই কমন আসামী আসামী আছেন পিরোজপুর এলজিএডির সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুস ছত্তার, উপ সহকারী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম এবং হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক খান।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সীমাহীন দুর্নীতির কারণে দেশব্যাপী আলোচনায় আসে পিরোজপুর এলজিইডি অফিস। এরপর স্থানীয় সরকার বিভাগ ও এলজিইডি’র প্রধান কার্যালয় থেকে অনেকগুলো তদন্ত টিম পিরোজপুর এলজিইডি অফিসে সীমাহীন দুর্নীতির প্রমান পায়। কাজ শেষ না করেই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি বিল পরিশোধ করা এবং এক হাজার ১০১ কোটি টাকা ব্যয়ে গরমিল পায় তদন্ত কমিটি। সর্বশেষ দুদক বিষয়টি তদন্ত করে এর সত্যতা পেয়ে দুর্নীতির সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। পিরোজপুর এলজিইডি অফিস ও জেলা হিসাব রক্ষণ অফিসের কর্মকর্তাদের যোগসাজসেই সীমাহীন এ দুর্নীতির ঘটনা ঘটেছে।