সুশান্ত শীল,আনোয়ারা (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি :
চট্টগ্রামের পতেঙ্গা ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের আনোয়ারার পারকি সমুদ্র সৈকতের পর্যটন সম্ভাবনা ও উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে এক কনসালটেশন সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সকাল ১১টায় আনোয়ারা উপজেলা সম্মেলন কক্ষে এ সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ট্যুরিজম বোর্ডের যুগ্ম সচিব (প্রশাসন ও অর্থ) আবু সেলিম মাহমুদ-উল হাসান।
সভায় তিনি বলেন, “পারকি সমুদ্র সৈকত পর্যটন শিল্পের জন্য একটি সম্ভাবনাময় এলাকা। কর্ণফুলী টানেল, সার্ভিস এরিয়া ও আশপাশের শিল্প কারখানাগুলো এই অঞ্চলে বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করেছে। ইকো ট্যুরিজম ও কৃষিভিত্তিক ট্যুরিজম গড়ে তোলার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে এখানে।” তিনি আরও বলেন, “আমরা সম্ভাব্যতা যাচাই করছি। ট্যুরিজম বোর্ডের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহায়তা দেওয়া হবে। আগামীতে পারকি সৈকত দেশের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।”
সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. রাশিদুল হক, আনোয়ারা থানার ওসি মো. মনির হোসেন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ফেরদৌস হোসেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা উমা খান কাফি, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী প্রিয়াংকা চাকমা, বখতিয়ারপাড়া চারপীর আউলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ওসমান গনি, ছাত্র প্রতিনিধি শাহেদুল আলম, আনোয়ারা প্রেসক্লাবে’র সভাপতি মোজাম্মেল হক, সাধারণ সম্পাদক ফৌজুল আজাদ চৌধুরী, ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ফ্যাসিলিটেশন কোম্পানির প্রতিনিধি, ট্যুরিজম বোর্ডের কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তর, আনোয়ারার সংবাদমাধ্যম ও সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকদের অভিযোগ, পারকি সৈকতের জনপ্রিয়তা দিনদিন বাড়লেও উন্নয়ন কার্যক্রম তেমন দেখা যায়নি। সন্ধ্যার পর সৈকতে নিরাপত্তাহীনতা বিরাজ করে, সড়কে নেই পর্যাপ্ত বাতির ব্যবস্থা। ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে নিয়মিত। এছাড়া, প্রভাবশালীরা খাস জমি দখল করে গড়ে তুলেছেন রেস্টুরেন্ট ও অন্যান্য স্থাপনা, এমনকি মাটি বিক্রির অভিযোগও রয়েছে।
পারকি সৈকত সূত্রে জানা যায় , এখানে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ছাড়াও, প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজারো পর্যটক পারকিতে ভিড় করেন। কিন্তু মানসম্মত হোটেল-মোটেল না থাকায় সন্ধ্যার আগেই তাদের ফিরে যেতে হয়। এ সমস্যাগুলোর সমাধানে ২০১৯ সালে ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সৈকতে পর্যটন কমপ্লেক্স গড়তে ৭৯ কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেয় পর্যটন করপোরেশন। ১৩.৩৬ একর জমিতে শুরু হওয়া প্রকল্পটির কাজ ছয় বছরেও শেষ হয়নি। তিন বছর আগে মেয়াদ শেষ হলেও কবে কাজ শেষ হবে, সে বিষয়ে কেউ নিশ্চিত নন।
পর্যটন বোর্ডের এই উদ্যোগ নতুন করে আশার আলো দেখাচ্ছে স্থানীয়দের। সঠিক পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে পারকি সৈকত সত্যিই দেশের পর্যটন খাতে বড় ভূমিকা রাখতে পারে—এমনটাই প্রত্যাশা সবার।
রিপোর্ট : সুশান্ত শীল, আনোয়ারা, চট্টগ্রাম।
তাং: ১৬/০৫/২৫ইং।